রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মোহাম্মদপুরে সন্ত্রাসী রহিম ও তার ছেলের অত্যাচার নির্যাতনে অসহায় এলাকাবাসী উত্তরা ব্যাংকের এমডি রবিউল হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অপসারনের দাবিতে রাজপথে বিল্পবী ছাত্র জনতা ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে দেখে কেঁদে ফেললেন মির্জা ফখরুল সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ওসমানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ-এর বিশেষ বাণী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খ. ম. আমীর আলী ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনে আহতদের জন্য আর্থিক সহায়তা নিয়ে পাশে বিএনপি নেতা মোঃ সাইফুল ইসলাম নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানক্লাব ‘নেবুলাস’-এর যাত্রা শুরু প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস গার্মেন্টস ব্যবসায়িদের নিঃস্ব করে কোটি টাকা প্রতারণা করে লাপাত্তা কৃষক লীগ নেতা হান্নান শেখ!
আত্মহত্যা না, আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে : ফারদিনের বাবা

আত্মহত্যা না, আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে : ফারদিনের বাবা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ ডেমরা এলাকায় সেতু থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ ও র‌্যাব। দুটি সংস্থা গতকাল বুধবার আলাদা সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানায়।

তবে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ের সামনে বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিনের বাবা বলেছেন, ‘আমার ছেলে আত্মহত্যা করেনি, তাকে পরিকল্পিতভাবেই হত্যা করা হয়েছে। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।

পুলিশের এই তদন্ত বিশ্বাস করি না। ‘

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর আত্মহত্যা করেছে, তা বিশ্বাস করতে পারছে না তার পরিবার ও সহপাঠীরা। এ নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) যে বক্তব্য দিয়েছে তার প্রমাণ দেখতে ডিবির আহ্বানে সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে সংস্থাটির কার্যালয়ে যান একদল শিক্ষার্থী। প্রায় এক ঘণ্টা পর ডিবির সঙ্গে বৈঠক করে বাইরে এসে বুয়েট শিক্ষাথীরা বলেন, ডিবি এ নিয়ে সলিড কোনো তথ্য দিতে পারেনি। আমরা এখনো পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিইনি। ক্যাম্পাসে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে মিডিয়াকে জানাব।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফারদিন হত্যার বিষয়ে ডিবির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পূর্বঘোষিত প্রতিবাদ সমাবেশ আপাতত স্থগিত করে ডিবি কার্যালয়ে যান বুয়েট শিক্ষার্থীরা।

গত ৪ নভেম্বর রাজধানীর রামপুরা পুলিশ বক্সের সামনে বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরাকে নামিয়ে দেওয়ার পর নিখোঁজ হন ফারদিন। এ ঘটনায় রামপুরা থানায় একটি নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি করেন ফারদিনের বাবা কাজী নুর উদ্দিন রানা।

৭ নভেম্বর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাঁর মৃতদেহ পায় নৌ পুলিশ। তাঁর পরিবার ও সহপাঠীরা দাবি করেন, ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকও তাঁকে হত্যার কথাই বলেন। ঘটনাটি উদ্ঘাটনের জন্য মাঠে নামে ডিবি পুলিশ ও র‌্যাব। দুই তদন্ত সংস্থার বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় তাঁর বান্ধবী বুশরাকে।

এক মাসেরও বেশি সময় ধরে নানামুখী খবর এবং পরিবারের সুষ্ঠু তদন্তের দাবির মধ্যে গতকাল বুধবার দুপুরে ডিবির পক্ষ থেকে প্রথমে সংবাদ সম্মেলন করে ফারদিনের আত্মহত্যার কথা জানানো হয়। পরে সন্ধ্যায় র‌্যাব সংবাদ সম্মেলন করে একই তথ্য জানায়।

পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ জানান, ‘ফারদিন নূর পরশ অন্তর্মুখী ছিলেন। সবার সঙ্গে সব কিছু শেয়ার করতে পারতেন না। তাঁর রেজাল্ট ক্রমান্বয়ে খারাপ হচ্ছিল। প্রথম সেমিস্টারে সিজিপিএ ৩.১৫ আসে, তারপর কমতে কমতে ২.৬৭, যেটা বাসার লোকজন বা আত্মীয়-স্বজন কেউ জানত না। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে স্পেন যাওয়ার জন্য ৬০ হাজার টাকা প্রয়োজন ছিল তাঁর, যেটা জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। বন্ধুরা তাঁকে ৪০ হাজার টাকা দেন। পরে একরকম মানসিক চাপে পড়েই আত্মহত্যা করেছেন। ’

হারুন অর রশিদ বলেন, ফারদিন চারটি টিউশনি করতেন। সব টাকা দিয়ে নিজের এবং ছোট দুই ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ চালাতেন। নিজের জন্য কিছু করতেন না। তার পরও বাড়ি ফেরার চাপ ছিল পরিবার থেকে। হলে থাকতে দেওয়া হবে না। এ নিয়ে এক ধরনের চাপের মধ্যে ছিলেন, যা তিনি মানতে পারেননি।

ঘটনার দিন ফারদিনের গতিবিধির বিষয়ে ডিবিপ্রধান বলেন, “তাঁর ফোনের দুটি নম্বরে ‘বি-পার্টি’ (কল ধরা) ছিল সর্বমোট ৫২২টি। ওই দিন রাতে তিনি যেখানে যেখানে ঘুরেছেন, তাঁর সেলফোনে কোনো একটি অবস্থানে বি-পার্টি আমরা সার্চ করে পাইনি। তিনি যেভাবে উন্মত্তের মতো ঘুরে বেড়িয়েছেন, তাতে প্রতীয়মান হয়, মানসিকভাবে ডিস্টার্ব ছিলেন। কারো সঙ্গে ওই দিন রাতে দেখা করেননি। তিনি বাবুবাজার ব্রিজ টার্গেট করেন। রাত ১০টা ৫৩ মিনিট থেকে ১১টা ৯ মিনিট—এই সময় বাবুবাজার ব্রিজ অনেক ব্যস্ত থাকায় সম্ভবত তিনি ওখান থেকে পিছপা হন। নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলে সময় নেন। এরপর আবার নিজের বাসা অতিক্রম করে ডেমরা সেতুতে যান। সর্বশেষ তাঁর গ্রামীণ নম্বরের আইপিডিআরে তাঁর অবস্থান সেতুর ওপর অনুমান করা হয়। ”

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com