রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫৬ পূর্বাহ্ন
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮২তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়া জেলার গাবতলীতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। দিবসটি পালনে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পান মাত্র চার বছর। বিপথগামী একদল সেনা সদস্যের হাতে ৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিস হাউসে নিহত হন তিনি। বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা জিয়াউর রহমান দেশ পরিচালনায় বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার যে দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন, একটি সমৃদ্ধ দেশ গঠনে তা অনুকরণীয় বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
কেন্দ্রীয়ভাবে দু’দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আজ শুক্রবার সকালে শেরে বাংলানগরে জিয়াউর রহমানের মাজারে নেতাকর্মীদের নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দলের পক্ষ থেকে ঢাকায় সুপ্রিমকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আজ সকাল ৬টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকালে জিয়ার মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ ছাড়া সেখানে এক মিলাদ মাহফিল ও বিনামূল্যে রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ড্যাবের উদ্যোগে সকাল থেকে শুরু হবে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ক্রোড়পত্র প্রকাশের পাশাপাশি বিভিন্ন পোস্টার ও ব্যানার ছাপানো হয়েছে।
মাত্র ১৭ বছর বয়সে জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৭১ সালে ২৭ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। ১৯৭৫ সালের সিপাহি-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে আবারও আলোচনায় আসেন জিয়াউর রহমান। নানা পটপরিবর্তনের একপর্যায়ে তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সাহসী ভূমিকায় বদলাতে শুরু করে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা। প্রশংসিত হয় তাঁর ১৯ দফা কর্মসূচি। দেশে ফিরিয়ে আনেন বহুদলীয় গণতন্ত্র।
অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘তাঁর নামের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের যে ধারা তার ইতিহাস জড়িয়ে আছে। এ মানুষটি যদি জন্মগ্রহণ না করতেন তাহলে হয়তো বাংলাদেশ অনেক কিছুই হারাতো।’
মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘জিয়াউর রহমান অত্যন্ত সৎ মানুষ ছিলেন। আমাদের রাজনীতিতে সততার এ রকম দৃষ্টান্ত বিরল।’এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদ মনে করেন, বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রর্বতনকারী দলটিকে সময়ের কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করতে পারে দলের প্রতিষ্ঠাতার মূলমন্ত্র।
অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দলের চলার পথ চিরকাল কুসুমাস্তীর্ণ থাকে না। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বাধা বিঘ্ন আসে। সেগুলোকে অতিক্রম করে, লড়াই করে একটি রাজনৈতিক দলকে এগিয়ে যেতে হয়। এ কঠিন সময়েও বিএনপিকে ধৈর্য ধরতে হবে এবং জিয়াউর রহমানের আদর্শের কাছে ফেরত যেতে হবে।