শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৮ অপরাহ্ন
পানি ছাড়া জীবন অচল। পানিশূণ্যতার কারণে দেহে নানা রোগ হতে পারে। এ কারণে দৈনিক আট গ্লাস পানি পানের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
তাদের মতে, এই পরিমাণ পানি পান না করলে শরীরে ঘাটতি দেখা দেয়। অবশ্য আরেক দল চিকিৎসক এ বিষয়ে একেবারে ভিন্নমত পোষণ করেন।
তাদের মতে, পানি পানের পরিমাণকে নির্দিষ্ট সংখ্যায় বেঁধে দেওয়া একেবারেই উচিত নয়। বরং যখনই তেষ্টা পাবে, তখনই পানি পান করুন। এমনটা করলে শরীর নিয়ে আর কোনো চিন্তা থাকবে না। গবেষকরা এটাও বলেন, যে পানি পান করবেন তা যেন হালকা গরম হয়। এতে একদিকে যেমন ডিইহাইড্রেশনের আশঙ্কা কমবে, অন্যদিকে শরীরেরও অনেক উপকার হবে।
এবার ‘বোল্ডস্কাই ডট কম’ অবলম্বনে জেনে নিন হালকা গরম পানি পানের উপকারিতা সম্পর্কে-
১. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
হালকা গরম পানি পানের অভ্যাস করলে শরীরের ময়লা সহজেই বের হয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
২. ওজন কমায়
হালকা গরম পানি পানে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। ফলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমার কোন সুযোগই থাকে না। এতে সহজেই ওজন কমে।
৩. বয়স কমায়
হালকা গরম পানি ত্বকের কোষগুলোর ক্ষত সারিয়ে এর স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। সেই সঙ্গে ত্বক টান টান হয়ে ওঠে এবং বলিরেখাও হ্রাস পায়। ফলে বয়সের কোনো ছাপ সহজেই ত্বকের উপর পরতে পারে না।
৪. ব্রণের প্রকোপ কমায়
হালকা গরম পানি টক্সিন বিরোধী হওয়ায় তা ত্বকে ময়লা জমতে দেয় না। এতে ব্রণের উপদ্রবও সহজেই কমে যায়। একইসঙ্গে ত্বকের আরও নানা সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখে এই পানি।
৫. ঠাণ্ডা সমস্যার সমাধান
ঠাণ্ডা লাগা, গলা ব্যথা প্রভৃতি শারীরিক সমস্যার চিকিৎসায় হালকা গরম পানির বিকল্প নেই। এই পানি রেসপিরেটারি ট্রাক্টকে পরিষ্কার করে ঠাণ্ডা লাগা এবং গলার অস্বস্তি ভাব কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে বন্ধ নাকও পুনরায় সচল হয়ে যায়।
৬. মানসিক চাপ কমায়
হালকা গরম পানি পানের পর সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে মানসিক চাপ কমে যায়। উদ্বেগও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৭. শরীরকে বিষমুক্ত করে
রক্তে ক্ষতিকর টক্সিনের মাত্রা বেড়ে গেলে কিডনি শরীর থেকে সেই টক্সিক উপাদনগুলো বার করে দেয়। না হলেও হাজারো রোগ হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে হালকা গরম পানি নানাভাবে সাহায্য করে। গরম পানি খাওয়া মাত্র শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে ঘাম শুরু হয়। আর ঘামের মাধ্যমে টক্সিনগুলো বেরিয়ে যেতে শুরু করে। চাইলে গরম পানিতে অল্প করে লেবুর রস মিশিয়েও খেতে পারেন।
৮. হজম ক্ষমতা বাড়ে
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, খাবার খাওয়ার পর ঠাণ্ডা পানি পানে পাকস্থলীর ভিতরের দেওয়ালে ফ্যাটের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। ফলে ধীরে ধীরে পাকস্থলীর কর্মক্ষমতা কমে যায়। তাই খাবার পর পর ঠাণ্ডা পানির পরিবর্তে হালকা গরম পানি পানের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, ঠাণ্ডা পানির কারণে সাধারণত যে যে সমস্যাগুলি হয়ে থাকে সেগুলো গরম পানি পানে একেবারেই হয় না। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতারও উন্নতি ঘটে। ফলে বদ-হজম এবং গ্যাসের মতো সমস্যাও মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ পায় না।