সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:১৭ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বদলে যাচ্ছে পুলিশ, র‌্যাব ও আনসারের পোশাক শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তার সাথে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নরসিংদীর শিবপুরে র‍্যাব ১১ অভিযানে অবৈধ পণ্যসহ গ্রেফতার এক সন্ধানী লাইফ ইন্সুরেন্স পতেঙ্গা মডেল শাখা কার্যালয়ে বীমা দাবীর চেক বিতরণী অনুষ্ঠান জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নরসিংদী জেলা তাঁতীদলের আলোচনা সভা আবারো সখিপুরে একই রাতে ৬টি গরু চুরি শরণখোলায় সড়ক দূর্ঘটনায় আহত ২ নরসিংদীর রায়পুরায় মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে দুই গ্রুপের বিরোধে প্রতিনিয়ত চলছে গোলাগুলি ডিমলায় আরফাত রহমান কোকো স্মৃতি ক্রীড়া সংসদ উপজেলা শাখা কর্তৃক আয়োজিত “ট্রফি উন্মোচন ও ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা-২০২৫ইং”-এর শুভ উদ্বোধন শারীরিক অক্ষম লাভলী সুলতানা খানের মানবিক কাজ!
এবার লাল-গেরুয়ার মুখোমুখি লড়াইয়ে ত্রিপুরা

এবার লাল-গেরুয়ার মুখোমুখি লড়াইয়ে ত্রিপুরা

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরাতে বিজেপি ও কমিউনিস্টদের সরাসরি লড়াই, আর সে কারণেই ত্রিপুরাতে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন একটা আলাদা মাত্রা পেয়ে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে একটানা শাসন করছে বামপন্থীরা, সেখানে এবার তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি ও উপজাতীয় দল আইপিএফটি-র জোট। কিন্তু মাত্র কয়েক বছর আগে যে রাজ্যে বিজেপির অস্তিত্ব পর্যন্ত ছিল না, সেখানকার ভোটে কেন তারা এভাবে সর্বশক্তিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে? আর ক্ষমতাসীন বামপন্থীরাই বা এই নতুন চ্যালেঞ্জকে কীভাবে দেখছেন? ভারতের প্রায় সাড়ে পাঁচশো আসনের লোকসভায় যে রাজ্য মাত্র দুজন এমপি পাঠায়, সেই ক্ষুদ্র ভূখণ্ডটি দখল করার জন্য বিজেপি কেন এতটা মরিয়া?

ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অনিন্দ্য সরকার মনে করেন, বামপন্থী বনাম সঙ্ঘের লাল-গেরুয়া লড়াইয়ের বাইরেও এখানে বিজেপির আরও একটা জিনিস প্রমাণ করার তাগিদ আছে, যে ভারতের সব প্রান্তেই তাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। অধ্যাপক সরকার বলেন, মতাদর্শগত লড়াইয়ের বাইরেও এটা হল বিজেপির সর্বজনগ্রাহ্যতা পাওয়ার লড়াই। নইলে মাত্র ৩৭ বা ৩৮ লক্ষ জনসংখ্যার একটা রাজ্যে তাদের এতটা বাড়াবাড়ি রকম অর্থ, সম্পদ বা লোকবল খরচ করার আর কোনও ব্যাখ্যা হতে পারে না।

এদিকে আগরতলা শহরের সূর্য চৌমহনি মোড়ে ভাষণ দিয়েছেন দিল্লিতে বিজেপি তথা আরএসএসের অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতা রাম মাধব, যিনি গত ছমাস ধরে ত্রিপুরার মাটি কামড়ে পড়ে। তিন বছর আগেও বিজেপি এ রাজ্যে অতি দুর্বল একটি শক্তি হলেও এবারের নির্বাচনে ষাট আসনের বিধানসভায় অন্তত চল্লিশটি আসন যে তারা পাবেই, সে কথা দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে ঘোষণা করেন তিনি। এই স্বপ্নকে সত্যি করতে বিজেপি এবারে ত্রিপুরার মতো ছোট রাজ্যে যে বিপুল অর্থ আর সাংগঠনিক শক্তি ব্যয় করেছে, তা প্রায় নজিরবিহীন। রাম মাধবের এটাও বলতে দ্বিধা নেই, ৩রা মার্চ ভোট গণনার দিনে কমিউনিস্টদের হারাতে পারলে তারা অকাল দীপাবলি পালন করবেন।

ক্ষমতাসীন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য হরিপদ দাস বলেন, এর কারণ একটাই – কমিউনিস্টরা ভারতে সঙ্ঘ পরিবারের সবচেয়ে বড় চক্ষুশূল। কমিউনিস্টরা হল তাদের এক নম্বর ঘোষিত শত্রু। এই কারণেই কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ কি অন্ধ্রতে তারা হারল কি জিতল তাতে বিজেপির তেমন কিছু যায় আসে না। কিন্তু এই ত্রিপুরাতে আমাদের হারাতে পারলে তাদের দশটা উত্তরপ্রদেশ জেতার সমান আনন্দ হবে, বলেছিলেন প্রবীণ এই সিপিএম নেতা।

মজার ব্যাপার হল, সিপিএমের নির্বাচনী প্রচারেও কিন্তু তাদের আক্রমণের প্রধান নিশানা প্রধানমন্ত্রী মোদী। ফাঁকা প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে কীভাবে তিনি দেশকে ধোঁকা দিচ্ছেন, বিধানসভা ভোটের প্রচারেও সেটাই তুলে ধরা হচ্ছে। সিপিএম ভোটের মুখে গান বেঁধেছে, দেশে জাম্বুরা গাছ রাখত না, কানার হাতে কুড়াল দিও না! সে গান বাজছে ত্রিপুরার পথে প্রান্তরে, গ্রামে পাহাড়ে। কানার হাতে কুড়ুল তুলে দিয়ে এ রাজ্যের মানুষ ত্রিপুরার সাজানো বাগান তছনছ করবে না, তাদের বিশ্বাস সেটাই! তবে পশ্চিমবঙ্গে চৌত্রিশ বছরের বাম শাসনের শেষ দিকে যেমন মানুষ তিতিবিরক্ত ছিল, অবিকল সেই একই ধরনের কথা কিন্তু ত্রিপুরাতেও আজকাল গরিব মানুষের মুখে শোনা যাচ্ছে।

এদিকে বলিউডের একটি আসন্ন সিনেমা – যার নাম লাল সরকার – সেটির কথাও ত্রিপুরার নির্বাচনী মরশুমে এখন লোকের মুখে মুখে ফিরছে। ত্রিপুরার বাম শাসনে কীভাবে মানুষ নির্যাতিত ও অত্যাচারিত, তা নিয়ে তৈরি এই সিনেমার টুকরো টুকরো ছবি এ রাজ্যে হোয়াটসঅ্যাপ আর ফেসবুকে ছেয়ে আছে, আর এর নির্মাতারাও বিজেপির ঘনিষ্ঠ বলেই অভিযোগ। ওই সিনেমায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর তথাকথিত স্বচ্ছ ভাবমূর্তিকেও আক্রমণ করা হয়েছে। আর লাল সরকার যেটা সিনেমার আড়ালে করছে, ত্রিপুরায় নির্বাচনী প্রচারে এসে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মোদী কিন্তু সেটাই করেছেন কোনও রাখঢাক না-রেখে। রাজ্যের কুড়ি বছরের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে সরাসরি আক্রমণ করে তিনি বলেছেন ত্রিপুরার এবার ভুল মানিক থেকে মুক্তি চাই, তার বদলে তাদের দরকার হিরা – অর্থাৎ হাইওয়ে, রেল, এয়ারপোর্টের মতো মেগা-অবকাঠামো প্রকল্প।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com