শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৮ অপরাহ্ন
হিমু আহমেদ-এর প্রতিবেদন:
সুমন শরীফ। বাংলাদেশের তারকা। উদিত হয়েছে ইউরোপের আকাশে। একদিকে সংগীতশিল্পী। অন্যদিকে তারকা ক্রিকেটার। দুই জগতেই বিচরণ করছেন সমান তালে। ১৯৯৪ সালে পরিবারের সাথে পাড়ি দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডে। পিতা ছিলেন যুক্তরাজ্যের নাগরিক। সেই সুবাদে সুমন শরীফকেও যেতে হয়েছিল পরিবারের সাথে।
কথায় আছে ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে। সুমন শরীফ অবশ্য স্বর্গে যাননি। গিয়েছিলেন ইংল্যান্ডে। দেশে ভালো ক্রিকেট খেলতেন। কাজেই ইংল্যান্ডে গিয়েও মনপ্রাণ ঢেলে ক্রিকেট খেলা শুরু করলেন। ফলও পেলেন হাতে হাতে। কঠোর অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেন উঁচু মাপের ক্রিকেটার হিসেবে। সুযোগ পেলেন ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ডিস্ট্রিক্ট লীগ এন্ড ক্লাব ক্রিকেটে। খেলতে খেলতে এক সময় থাকে খ্যাতির শিখরে উঠতেও সক্ষম হলেন। এক সময় নিজ দলের ক্যাপ্টেন হিসাবে দায়িত্ব পেয়ে নিজেকে নিয়ে গেলেন এখন অনন্য উচ্চতায়। বিদেশের মাটিতে দেশের গৌরবও বৃদ্ধি করলেন।
এখানেই শেষ নয়। দেশে থাকতেই ভালো গান গাইতেন। সব্যসাচী বড় মামা মীর লিয়াকত আলী ছিলেন একাধারে একজন লেখক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, কলামিষ্ট, প্রাবন্ধিক, ছড়াকার, কথাশিল্পী, নিবন্ধকার, সুরকার, গীতিকার, সঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক, স্ক্রীপ্ট রাইটার, অনুষ্ঠান পরিচালক ও পরিকল্পক, নাট্যকার, কার্টুনিষ্ট, কবি, ঔপন্যাসিক, সংগঠক, ক্রীড়াবিদ, শিক্ষক, গ্রন্থকার, প্রকাশক, সম্পাদক, মানবাধিকার কর্মী ও গবেষক। শুধু তাই নয় তিনি ছিলেন বেতার টেলিভিশন এর অনুমোদিত গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী। সঙ্গীত প্রশিক্ষক হিসেবেও তার পরিচিতি ছিল। আজকের দিনের অনেক প্রতিভাবান সঙ্গীত পেশাজীবিদের হাতেখড়ি তার হাতে। সুমন শরীফও শৈশব থেকে সেই মামার সান্নিধ্যে থেকে হয়ে উঠেছিলেন একজন সম্ভাবনাময় তরুণ শিল্পী। ইংল্যান্ডে গিয়েও তিনি তার সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। এরই ফলশ্রুতিতে তিনি সেখানেও অর্জন করেছিলেন ব্যাপক জনপ্রিয়তা। তার জনপ্রিয়তা শুধু ইংল্যান্ডেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও তিনি স্টেজ কাঁপাতে সক্ষম হয়েছিলেন।
ইংল্যান্ডে থাকলেও তিনি দেশের মায়ায় প্রতি বছরই ফেব্রুয়ারি মার্চ মাসের দিকে বাংলাদেশে চলে আসেন। গানের এলবাম বের করেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। মিডিয়াতে ও প্রচুর সময় দেন। সম্প্রতি শিল্পী সুমন শরীফের ‘রাত’ নামে নতুন একটা গানের রেকর্ড বেরিয়েছে। মৌলভীবাজারের কৃতি সন্তান সালেহ মওসুফের লেখা গানটি সুর করেছেন শিল্পী নিজেই। বিজয় মামুনের অনন্য সংগীতে এবং কেকে মিডিয়ার ভিডিওগ্রাফিতে, লন্ডন শহরের ব্যাকগ্রাউন্ডে গানের কথাগুলো যেন মিশে গেছে শিল্পীর হৃদয়ছোঁয়া মেলোডিয়াস কণ্ঠে। রিলিজ হওয়ার সাথে সাথেই লাইক, কমেন্ট, শেয়ারের বন্যা দেখে মনে হচ্ছে এই গানটির মাধ্যমেও শিল্পী শ্রোতাদের হৃদয় ছুঁয়ে ফেলেছেন। এখন দেখা যাক নতুন এই গানটি শিল্পীকে কোন উচ্চতায় নিয়ে যায়? বিদেশের মাটিতে এক টুকরো বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে যারা বিশেষ ভূমিকা রাখছেন, সুমন শরীফ তাদেরই একজন। সুমন শরীফ সংগীত এবং ক্রিকেট জগতে দাপটের সাথে বিচরণ করুন, এ প্রত্যাশা সকলের।
হিমু আহমেদ
himuahmed964011@gmail.com